দূর্নীতিগ্রস্ত সিস্টেম এবং কোটাপ্রধান আমলাতন্ত্র তৈরির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে ব্যবহার করে দেশ অচল করার ষড়যন্ত্রে বেপরোয়া হয়ে ওঠা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে দেশ রক্ষার পণ করেছিলো একদল দেশপ্রেমী বিপ্লবী, যাদের ডাকে সাড়া দিয়েছিলো পুরো দেশের ছাত্রসমাজ। এ যেন মহামারি রূপে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ল মুক্তির সোপান হিসেবে। কোটা পূনর্বহাল রায়ের ক্ষোভ প্রকাশের সূত্র ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে পুরো দেশে।সেই প্রেক্ষিতেই চট্টগ্রামে ঢাকা পরবর্তী বড় আন্দোলন সূচনা ঘটে।চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রতিটি মূলসড়কে আন্দোলনকারীরা তাদের দৃঢ় অবস্থান জানান দেয়। রাস্তাগুলি আবেগপূর্ণ স্লোগান এবং প্রাণবন্ত ব্যানারে পূর্ণ ছিল, যা পরিবর্তনের প্রতি শিক্ষার্থীদের অটল অঙ্গীকার প্রদর্শন করে।
আত্নকেন্দ্রীক স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠী এতবড় আন্দোলনকে নস্যাৎ করে দেয়ার লক্ষ্যে চালায় তাদের সহিংস হামলা। ভয়াবহভাবে আহত হওয়া সহ প্রাণ হারায় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। শাসকের নৃশংসতার ফলাফল হিসেবে ক্রমেই ৯ দফার মেধাবিপ্লব ১ দফায় রূপ নেয়। যার শেষ হয় স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের পতন ও পলায়নের মধ্য দিয়ে। দেশবাসী সেই বহুল অপেক্ষিত বিজয়ের দেখা পায় যা নতুন আশার আলো জাগায় মানুষের মনে। জয়ধ্বনিতে মুখরিত হয় পুরো চাঁটগা।তবে সংগ্রাম মাত্র শুরু। এখন নেমে পড়তে হবে রাষ্ট্রগঠনে।সদ্য অর্জিত বাকস্বাধীনতা ফিরে পেয়ে ছাত্ররা দেশের অন্য শহরগুলোর মতো গ্রাফিতি আর দেয়ালচিত্রে রাঙিয়ে দেয় সমস্ত অলিগলি। স্বৈরাচার সরকারের দোসর পুলিশবাহিনী যখন দায়িত্ব রেখে পালিয়ে যায়, প্রতিটি রাস্তার মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে ট্রাফিক কন্ট্রোল করা থেকে শুরু করে রাতভোর মন্দির পাহারা দিয়ে দাঙ্গামুক্ত সম্প্রীতির পরিবেশ তৈরি করে বিপ্লবী ছাত্রসমাজ। আর সবাই মিলে স্বপ্ন দেখে এক নতুন বাংলাদেশের, যেখানে শুধু মেধার জয়ধ্বনি।